ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার করোনা ‘রেড জোনে’ লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর প্রশাসন

রেড জোন চকরিয়ায় লকডাউন চলাকালীন নিষেধাজ্ঞা না মেনে সড়কে বের হলে কয়েকটি ইজিবাইক জব্দ করে প্রশাসন

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া ঃ

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে ‘রেড জোন’ হিসেবে শণাক্ত করা হয় কক্সবাজার জেলাশহরের পর চকরিয়া পৌরসভা এবং উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডকে। এসব রেড জোনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ঘোষিত ১৪ দিনের লকডাউন কার্যকর করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বেশ লক্ষ্যনীয় হয়ে উঠেছে।

বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রতিটা ‘রেড জোনে’ অনেকটা কারফিউর মতোই লকডাউন কার্যকর করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। একইসাথে পুলিশও টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

সরজমিন দেখা গেছে, করোনার হটস্পট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জেলার সম্মুখস্থল চকরিয়া পৌরসভার পুরো এলাকা এবং উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ২, ৩ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডকে রবিবার প্রথমপ্রহর থেকে কঠোর লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে রবিবার লকডাউন শুরুর প্রথম থেকেই সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যত্রতত্র ফুটপাত ও মার্কেট খুলে দিব্যি বিকিকিনি শুরু করে একশ্রেণীর লোভী ব্যবসায়ী। যথারীতি ছোট যানবাহনগুলোও বেরিয়ে পড়ে যাত্রী আনা-নেওয়ায়।

এই পরিস্থিতিতে সকাল ১১টার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং করোনা ‘রেড জোনে’ কর্মরত স্বেচ্ছাসেবকরা একযোগে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। এতে সকাল থেকে কোলাহলপূর্ণ থাকা চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গায় মুহূর্তের মধ্যে নেমে আসে নীরবতা। বন্ধ হয়ে যায় হাজারো দোকান-পাট। এতে লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর হতে শুরু করে। প্রশাসনের এই অভিযানকে তাৎক্ষণিক সাধুবাদ জানায় সর্বসাধারণ।

স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত শনিবার পর্যন্ত হাজার ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে সরকারি হিসেবে জেলায় মারা গেছে ২৩ জন (বেসরকারি হিসেবে আরো বেশি)। তন্মধ্যে শণাক্ত হওয়া রেড জোনে মৃত্যু এবং আক্রান্তের হার বেশি।

এ প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ চকরিয়া নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘একজন মানুষও যাতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত না হয়, সেজন্যই প্রশাসনের এই তৎপরতা। ১৪ দিনের ঘোষিত লকডাউন যাতে শতভাগ কার্যকর করতে পারি, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এইসময়ে যারা কর্মহীন পড়ে পড়বেন তাদের তালিকা তৈরি করে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে এবং সরকার ঘোষিত ৮টি নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে।’

এদিকে সচেতন মহলের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে ইজিবাইক (টমটম) ও ব্যাটারী চালিত রিক্সা গ্যারেজগুলো। লকডাউন চলাকালীন পৌরসভা ও ডুলাহাজারার অন্তত শতাধিক চার্জ স্টেশন তথা গ্যারেজের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং পৌরশহর চকরিয়ায় প্রবেশদ্বার বিভিন্ন ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোকে কঠোরভাবে লকডাউন করার।

এ প্রসঙ্গে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান চকরিয়া নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘ করোনা রেড জোনে শতভাগ লকডাউন কার্যকর করার ক্ষেত্রে যা-ই প্রয়োজন হবে তার সবটুকু উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

পাঠকের মতামত: